তামিমের চোখে দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন যেখানে
২০০৭ সালে পোর্ট অভ স্পেনে জহির খানের বলে ডাউন দ্য উইকেটে হাঁকানো বিশাল ছক্কা… বাংলাদেশের ক্রিকেটে তামিম ইকবাল নামের এক রত্নের উত্থানের গল্পটা সেখান থেকে। পরের দেড়যুগ ধরে টাইগার ক্রিকেটের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছেন চট্টগ্রামের এই লোকাল হিরো। ৩৫ বছর বয়সে এসে দেখে ফেলেছেন দেশের ক্রিকেটের অনেক কিছুই।
ক্যারিয়ারের একেবারেই শেষ পর্যায়ে এসে পড়েছেন তামিম। সেটা একপ্রকার বলাই যায়। গতকাল সোমবার বিসিবিতে গিয়েছেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে। এরপর থেকেই গুঞ্জন উঠেছে তার ক্রিকেট বোর্ডে যুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে। যদিও তামিম এখন পর্যন্ত মাঠের খেলোয়াড়ই থাকছেন।
দীর্ঘ এই পথচলায় তামিম ইকবাল বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ডের বন্যা যেমন বইয়ে দিয়েছেন, তেমনি দেখেছেন নতুন এক প্রজন্মকে। ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর ম্যাগাজিন দ্যা ক্রিকেট মান্থলির সাথে কথা বলতে গিয়ে তামিম জানালেন, বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন এসেছে এই তরুণ প্রজন্মের ক্রিকেটারদের হাত ধরেই।
সেপ্টেম্বরে নিজের ওল্ড ডিওএইচএসের বাসায় বসে এই সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। যা প্রকাশ করা হয়েছে সম্প্রতি। সেখানেই দেশের ক্রিকেট, নিজের ক্যারিয়ারসহ নানান বিষয়েই মন্তব্য করেছেন দেশের সাবেক এই অধিনায়ক। আলাপকালেই বললেন তার চোখে ক্রিকেটের বড় পরিবর্তন এসেছে প্রফেশনালিজমে, ‘আসলে ৭-৮ বছর আগেও হয়ত মনে হত যে আপনার একজন হেডমাস্টার দরকার (নজর রাখার জন্য)। কারও হয়ত তাকে বলতে হবে, “তুমি এটা করো, তোমার সেটা করার দরকার।” এখানে আসলে তরুণ ক্রিকেটারদের কৃতিত্ব দিতে হবে। সাথে কিছু সিনিয়র ক্রিকেটারদেরও, এই পরিবর্তন আনার জন্য।
তামিম বলেন, আমার মনে হয় না এখন আমাদের এভাবে বলতে হয়। আপনি দেখবেন এখন অনেকে নিজের উদ্যোগে জিম রানিং করছে। তারা নিজে থেকেই ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছে। এটাই আসলে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন বলে আমার মনে হয়।’
বয়সের সাথে ক্রিকেটারদের চিন্তাধারায় পার্থক্যের দিকটাও উঠে এসেছে তামিমের আলাপে, ‘আসলে আপনাকে ভালোভাবে নিজেকে জানতে হবে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি এখন একজন ৩৫ বছর বয়সীর সাথে কথা বলছেন। এখানে অনেক তফাত থাকবে একজন ২৫ বছর বয়সী ক্রিকেটারের সাথে। হয়ত ২৫ বছর বয়সী বলবে যে সে অনেক অনেক কিছু করতে চায়। ৩৫ বছর বয়সী হয়ত বলবে হ্যাঁ, কঠোর পরিশ্রম করো। কিন্তু কথা বলার সময় বুঝতে হবে, কার সঙ্গে কোন কথা যাচ্ছে।
মানসিকতার পার্থক্য ব্যক্তিত্বের কারণে হয় বলেই বিশ্বাস করেন তামিম, ‘বিষয়টি আসলে ব্যক্তিত্বের উপর নির্ভর করে। একসময় আমি লম্বা সময় ব্যাটিং করতাম। পরে এমন সময় আসলো যে ৩০-৪০ মিনিটের ব্যাটিংয়ের ফলেও আমি খুশি থাকতাম।’
বাংলাদেশ ক্রিকেটে তামিম ইকবাল আপাতত কিছুটা দূরেই আছেন। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে অবসর নিয়েছিলেন। এরপর ফিরে এসে খেলেছেন কেবল একটি ওয়ানডে। এরপরে আর খেলা হয়নি। আছেন বিশ্রামে। আলোচনা চলছিল ফিরে আসার। সেই প্রত্যাবর্তন কবে হয়, সেটা দেখার অপেক্ষা এখন ক্রিকেটভক্তদের।
সূত্র: ঢাকা পোষ্ট