চুই ঝালের ঔষধি গুণ
চুই ঝাল একটি লতানো উদ্ভিদ। চুই লতা জাতীয় অর্থকরী ফসল। এর কাণ্ড, শিকড়, শাখা, প্রশাখা সবই মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Piper chaba। এটি Piperaceae পরিবারের অন্তভূক্ত।
চুই ঝাল গাছ দেখতে পানের লতার মতো। পাতা কিছুটা লম্বা ও পুরু। পাতায় ঝাল নেই। লতা সুযোগ পেলে ৪০ থেকে ৫০ ফুট পর্যন্ত বাড়ে। পাতা ২ থেকে ৩ ইঞ্চি লম্বা হয়। হার্টের মতো আকার। পুরুষ স্ত্রী ফুল আলাদা লতায় জন্মে। পরাগায়ন প্রাকৃতিকভাবেই সম্পন্ন হয়। বর্ষায় ফুল আসে, শীতের শুরুতে ফল আসে।
চুই সাধারণত ২ প্রকার। একটির কাণ্ড আকারে বেশ মোটা ২০ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার, অন্যটির কা- চিকন, আকারে ২.৫ থেকে ৫ সেন্টিমিটার। চুই গাছ ১০ থেকে ১৫ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। উঁচু জায়গায় চুইঝালগাছ ভালো হয়। গোড়ায় পানি জমলে গাছ পচে যায়। রান্নায় এর ঝাল খাবারের স্বাদ বাড়ায় আবার শরীরেরও কোনো ক্ষতি করে না। ঝোল জাতীয় মাছ-মাংস সব কিছুতেই স্বাদ তৈরি করে।
চুই ঝাল গাছ দীর্ঘদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এই গাছ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া,ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিংগাপুর ও শ্রীলংকায় জন্মে।
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিশেষ করে খুলনা বিভাগের রন্ধনশৈলীতে চুইঝালের ব্যবহার ব্যাপক। এর কাণ্ড বা লতা কেটে ছোট টুকরো করে মূলত-মাংস রান্নায় ব্যবহার করা হয়। এই গাছের কাণ্ড, শিকড়, পাতা, ফুল ও ফল ঔষধ হিসেবেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ঔষধি গুণ
১। চুই ঝাল খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
২। চুই ঝালের শিকড় সিদ্ধ করে সেই পানি সেবন করলে পাকস্থলী সুস্থ থাকে।
৩। চুই ঝাল এর পাতা থেঁতো করে খেলে খাবারে রুচি বাড়ে।
৪। চুই ঝালের ফল খেলে মানসিক অস্থিরতা কমে।
৫। চুই ঝালের শিকড় সিদ্ধ করে নিয়মিত সেবন করলে অনিদ্রা কেটে যায়। এবং শারীরিক দুর্বলতা কেটে যায়।
৬। চুই লতার সাথে আদা পিষে খেলে সর্দি সমস্যা ভালো হয়।
৭। চুই ঝাল খেলে কাশি, কফ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া ও রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
সূত্র: ডেইলি বাংলাদেশ